Header Ads Widget

Responsive Advertisement

“যে কোনও সময় রুশ হামলার আশঙ্কা, আতঙ্কে সুইস সেনাপ্রধান”

 


সুইজারল্যান্ডের মতো একটি ঐতিহাসিকভাবে নিরপেক্ষ দেশ যখন তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে এমন সরাসরি আশঙ্কা প্রকাশ করে, তখন বোঝা যায় ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কতটা নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। আপনার দেওয়া তথ্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে এবং বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন নিচে তুলে ধরা হলো:

​সুইজারল্যান্ডের প্রতিরক্ষা সংকট: নিরপেক্ষতা কি এখন কেবলই একটি 'ভুল ধারণা'?

​সুইস সশস্ত্র বাহিনীর বিদায়ী প্রধান থমাস সাসলি (Thomas Süssli) অতি সম্প্রতি (ডিসেম্বর ২০২৫) রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকি নিয়ে যে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তা ইউরোপের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাঁর বক্তব্যের মূল নির্যাস হলো—সুইজারল্যান্ড বর্তমানে কোনো বড় আকারের সামরিক আক্রমণ ঠেকানোর জন্য প্রস্তুত নয়।

​১. মূল সংকট: সক্ষমতার অভাব

​সাসলি স্বীকার করেছেন যে, জরুরি অবস্থায় সুইজারল্যান্ডের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সেনা প্রয়োজনীয় যুদ্ধের সরঞ্জামে সজ্জিত থাকবে। বর্তমান আধুনিক যুদ্ধে যা অত্যন্ত অপর্যাপ্ত। তাঁর মতে:

  • ​সুইজারল্যান্ড অবকাঠামো রক্ষা এবং সাইবার হামলা মোকাবিলায় সক্ষম হলেও, পূর্ণাঙ্গ সামরিক আগ্রাসন প্রতিহত করার শক্তি তাদের নেই।
  • ​সেনাবাহিনীতে আধুনিক ড্রোন, ভারী সরঞ্জাম এবং পর্যাপ্ত গোলাবারুদের তীব্র সংকট রয়েছে।

​২. আধুনিকায়নের পরিকল্পনা ও সীমাবদ্ধতা

​পরিস্থিতি সামাল দিতে সুইজারল্যান্ড কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে:

  • F-35 যুদ্ধবিমান: পুরোনো বিমানগুলো সরিয়ে আধুনিক মার্কিন স্টিলথ ফাইটার জেট অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
  • বাজেট বৃদ্ধি: বর্তমান জিডিপির ০.৭% থেকে বাড়িয়ে ২০৩২ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা বাজেট ১% করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
  • সাসলির উদ্বেগ: সেনাপ্রধানের মতে, এই মন্থর গতিতে কাজ চললে সেনাবাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত হতে ২০৫০ সাল লেগে যাবে, যা বর্তমান রুশ হুমকির মুখে অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং দেরিতে নেওয়া পদক্ষেপ।

​৩. নিরপেক্ষতা বনাম নিরাপত্তা

​সুইজারল্যান্ডের নাগরিকদের মধ্যে একটি প্রচলিত ধারণা ছিল যে, 'নিরপেক্ষ' থাকা মানেই নিরাপদ থাকা। কিন্তু সাসলি এই ধারণাকে "ঐতিহাসিকভাবে ভুল" বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর যুক্তিগুলো হলো:

  • ​সুইজারল্যান্ড থেকে ইউক্রেন যুদ্ধের দূরত্ব অনেক হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের মিথ্যা নিরাপত্তা বোধ (False sense of security) তৈরি হয়েছে।
  • ​ইতিহাস সাক্ষী দেয় যে, একটি সশস্ত্র দেশ নিরপেক্ষ হলেও আগ্রাসনের শিকার হতে পারে যদি তার আত্মরক্ষার সক্ষমতা না থাকে।
  • ​রাশিয়া যদি ইউক্রেন দখল করতে সফল হয়, তবে সুইজারল্যান্ড ও রাশিয়ার মাঝে থাকবে কেবল হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়া—যা ভৌগোলিক নিরাপত্তার জন্য বড় ঝুঁকি।

​বর্তমান অবস্থান

​সুইজারল্যান্ড এখন ন্যাটোর (NATO) সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার এবং ড্রোন প্রযুক্তিতে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে কঠোর নিরপেক্ষতা নীতি বজায় রেখে কীভাবে এই বিশাল সামরিক শূন্যতা পূরণ করা সম্ভব, সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

Post a Comment

0 Comments

“১০০০ গোলের পর কি অবসর? রোনাল্ডোকে ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে”