Header Ads Widget

মাসিক আয়ই ছিল কোটি টাকার ঘরে, খালেদা জিয়ার মোট সম্পত্তির পরিমাণ জানলে চমকে উঠবেন

  


বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, সকাল ৬টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফুসফুস ও কিডনিসহ একাধিক জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।

খালেদা জিয়ার প্রয়াণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেমে এসেছে গভীর শোক। দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক প্রভাবশালী ও সুপরিচিত মুখ। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ প্রকাশিত শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতি ও বিএনপির নেতৃত্বের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”

১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করা খালেদা জিয়া ১৯৫৯ সালে সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৮১ সালে সামরিক কর্মকর্তাদের হাতে জিয়াউর রহমান নিহত হলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক পথচলায় বড় মোড় আসে। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং ১৯৮৪ সালে বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন।

তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর প্রথম মেয়াদ ছিল ১৯৯১ সালের মার্চ থেকে ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পরে ১৯৯৬ সালে স্বল্প সময়ের জন্য দ্বিতীয়বার এবং ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তৃতীয় মেয়াদে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন, তেমনই নানা রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতেও ছিলেন।

খালেদা জিয়ার সম্পদের সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে সরকারি ভাবে বিস্তারিত তথ্য না থাকলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় জমা দেওয়া হলফনামা থেকে কিছু ধারণা পাওয়া যায়। ওই হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ১ কোটি ৫২ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা। বাড়ি, ফ্ল্যাট ও দোকান ভাড়া থেকে আয় ছিল প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা এবং শেয়ার ও ব্যাংক আমানত থেকে প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর জমা অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাফল্য ও বিতর্ক—দু’টিই ছিল খালেদা জিয়ার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর প্রয়াণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের অবসান ঘটল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।